জেলে জীবনের নিত্য সঙ্গী, হাতে তৈরি মাছ ধরার জাল:

in Incredible Indialast year
হ্যালো বন্ধুরা

pexels-quang-nguyen-vinh-14021749.jpg

Source:

IMG_20230909_113309.jpg

Source: Mobile Camera

এখন ভাদ্র মাস, বর্ষাকালই বলা চলে। এই সময়ে বাংলাদেশে সাধারণত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বর্ষার পানিতে নদী-নালা ভরে যায়। বর্ষার জলে মাঝে মাঝে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নদী ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এ সময় প্লাবিত হয়। এ সময় প্লাবিত এলাকার নদী-নালা, খাল ও হ্রদে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যায়।

IMG_20230909_113312.jpg

Source: Mobile Camera

বাঙালিদের নিয়ে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে,সেটা হলো মাছ-ভাতে বাঙালি। মাছ ছাড়া আমাদের খাবার প্লেট পূর্ণ-ই হয় না। বর্ষাকালে জেলেদের সঙ্গে অনেক সৌখিন মাছ শিকারী ও যুক্ত হয় এই মাছ ধরার প্রতিযোগিতায়। বছরের অন্যান্য ঋতুতে মানুষ ব্যস্ত থাকলেও বর্ষাকালে তারা অনেকটা অবসর সময় কাটায়। এই সময়ে যেহেতু নদী নালা খাল- বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় এবং তাদের বাড়তি কাজ না থাকায় তারা পরিবারের মাছের চাহিদা মেটাতে মাছ শিকারে যায়।আর এই মাছ ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলো জাল।

IMG_20230909_104155.jpg

Source:Mobile Camera

গ্রামের মানুষ গ্রীষ্মকালীন ধান ক্ষেত থেকে কেটে আনার পর অবসর সময়ে বিভিন্ন জাল বুনতে ব্যস্ত হয়। তারা ঝাঁকি জাল, ধর্ম জাল, ঠেলা জাল, গুগা জাল, টানা জাল সহ বিভিন্ন ধরনের জাল বুনে থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে ঝাঁকি বা তৌর জাল বেশি দেখা যায়। তবে, কেউ কেউ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জাল বুনন করে যেটা পরবর্তীতে বাজার থেকে কিনতে হয়। অনেকের আবার শখ থাকে জাল বুননের। এই সময়ে এমন জাল বোনার অনেক দৃশ্য পড়ে গ্রামাঞ্চলে।

একই রকম দৃশ্য দেখলাম সেদিন বাগেরহাট জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে।সেখানে কয়েকজন মিলে জাল বুনছে আবার কেউ কেউ সেই জালের সুতাকে টেকসই করার জন্য গাবের আঁঠায় ভিজিয়ে রোদে শুকিয়ে নিচ্ছে।

IMG_20230909_113322.jpg

Source: Mobile Camera

ছবিতে যিনি জাল বুনছেন তার নাম আবুল শেখ,বয়স আনুমানিক ৬৮ বছর। খুব নিপুণভাবে একাগ্রচিত্তে জাল বুনছেন তিনি। যে জালটি বুনছিলেন তখন তা স্হানীয় ভাষায় টানা জাল নামে পরিচিত। একটি জাল বুনতে শক্ত নাইলন সুতো, লোহার কাঠি এবং দড়ি লাগে। এই জাল সাধারণত হাতে বোনা হয়। একটি টানা জাল বুনতে অনেক ধৈর্য লাগে। এই জাল বুনতে কয়েক মাস সময় লাগে।

IMG_20230909_104142.jpg

Source: Mobile Camera

তবে বেশিরভাগ জাল এখন মেশিনে বোনা হয়। মেশিন দ্বারা নির্মিত জাল এবং হস্তনির্মিত জালের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। হস্তনির্মিত জাল অনেক নিখুঁত হয়। এছাড়া হাতে তৈরি জাল অনেক শক্ত ও টেকসই মানের হয়। স্হানীয় আরেক প্রবীন জনাব মোস্ত শেখ বললেন,বাবা এখন তোমরা ডিজিটাল যুগের ছেলে,এসব কাজ মেশিনের মাধ্যমে করছ,কালে কালে এই হাতে বোনা জাল আর দেখা যাবে না হয়ত।

তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই।আমার পোস্টটি পড়ে কেমন লাগল তা কমেন্টে জানাবেন।

ধন্যবাদ

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7yctNbUfy3Svm873NHceMEBkiU7QugfFD3RdWkWB8D5Nn71Vnqc38zTwcdMtsxGBY9bLpzWCxcXrK7yhhF5vsc2ofGXjYS.png

Sort:  
Loading...
 last year 

অন্যান্য সময়ের চাইতে এখন মাঝিদের মাছ ধরার উত্তম সময়। অন্যান্য সময়ের সাথে বর্ষাকালে বৃষ্টি বেশি হয়ে থাকে এবং মাছও বেশি পাওয়া যায়।

আমরা বাঙালি তাই মাছ ছাড়া আমাদের কোন কথাই হয় না। খাওয়ার সময় মাছ থাকতে হবে এটা বাঙ্গালীদের এটা স্বভাবে পরিণত হয়ে গেছে। খুবই ভালো লেগেছে আপনার পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য।

হ্যা আপনি সঠিক বলেছেন।এই সময় মাছ বেশি ধরা পড়ে নদীতে।তাই জালের চাহিদা ও বাড়ে।তবে এই বিপুল চাহিদার কাছে হাতে তৈরি জালের পরিমাণ অতি নগন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যর জন্য।

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।

 last year 

বর্তমান সময়ে বর্ষাকালে বলা চলে এই সময়ও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টুপাত হয়ে থাকে ৷ আর জেলেদের মন ভরে যায় তারা বৃষ্টি আসলেই অনেক উৎসাহিত পায় নদীতে মাছ ধরার জন্য ৷

তারপর দেখলাম একটি মানুষ জাল বুনতেছে ৷ আসলে নিজের হাতে জাল বুনলে সেই জালে মাছ ও আটকে এবং জালটার টেকসই অনেক দিন পর্যন্ত দিয়ে থাকে ৷

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

 last year 

বর্ষাকাল মানেই তো নতুন মাছের আগমন। বর্ষাকালেই মানুষ নতুন মাছ দেখতে পায়,, কারণ নতুন পানির সাথে নতুন মাছের আগমন ঘটে। আমার শ্বশুর মশাইও বেশ কিছুদিন ধরে এই বর্ষার পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। যদিও অল্প মাছ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এই অল্প মাছের স্বাদ,, বেশি মাছের চেয়ে উত্তম।

একদমই ঠিক বলেছেন,, অন্যান্য সময় মানুষের কাজ থাকলেও বর্ষার সময় মানুষ অনেকটা সময় বসে থাকে। এ কারণেই তারা জাল বুনে এবং মাছ ধরার ট্রাই করে। আজকে আপনি জাল বুনা এবং বাংলাদেশের মাছ ধরার বিষয় নিয়ে বেশ কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের জাল পাওয়া যায়,, আপনি যে জাল গুলোর নাম আপনার পোস্টে উল্লেখ করেছেন। এই জাল গুলো আমাদের এলাকাতেও পাওয়া যায়। আমাদের এলাকাতে বর্তমানে চারপাশে পানির তেমন একটা আনাগোনা না থাকলেও। নতুন মাছের আনাগোনা মোটামুটি রয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

বর্ষায় দেশী মাছের আনাগোনা একটু বেশি হয় অন্যান্য সময়ের থেকে।ভাল লাগল এটা জেনে আপনার শ্বশুর মশাই এখনো সেই প্রথা বজায় রপখেছে।দেশী মাছ অল্প খেলেও এতে আলাদা স্বাদ রয়েছে যা অতুলনীয়।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যর জন্য।

 last year 

ছোটবেলায় দেখেছি বাবা বাজার তেকে কারেন্ট জাল কিনে নিয়ে আসতে। আপনি যেরকম বলেছেন বর্ষায় ডোবা নালা পানিতে ভর্তি হয়ে যায় তো বাবা সেই কিনে আনা জাল পানিতে বসাতো ওই জালে কই মাছ শিং মাছ টাকি পুঁটি মাছ ধরা পড়তো। আপনি ঠিক বলেছেন আমার বাবাও বর্ষায় জাল বুনতো।

কারেন্ট জাল এখন বাংলাদেশে অবৈধ ঘোষণা করেছে।কারেন্ট জাল ব্যবহার না করায় ভাল কারন এতে আমাদেরই উপকার হবে ভবিষ্যতে।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যর জন্য