It is important to maintain control over one's emotions. আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা!

in Incredible India3 days ago
1000028962.png

কি বাচাল? এত বাড়তি কথা বলে? সারাক্ষণ শুধু বকে যাচ্ছে?
আবার উল্টো কথাও কানে আসে, ওইরকম চুপ করে থাকল কি হবে, পেটে পেটে দূর্বুদ্ধির অভাব নেই!
শান্ত শিষ্ট দেখতে মনে হয়, কিন্তু কেবল ক্ষতির মানসিকতা!

  • সমাজে এই দু'শ্রেণীর বক্তব্য ঘরে বাইরে প্রায়ই বলতে শোনা যায়।
    যারা মন খুলে হাসতে, কথা বলতে, বন্ধুর মতো মিশতে চায়, তাদেরকে প্রথম মানে ওই বাচাল আখ্যা দেওয়া হয়!

  • অপরদিকে, যারা মুখবুজে সবকিছু মেনে নিয়ে নিজের কাজে মনোনিবেশ করে থাকেন, তাদের যে কেউ ছেড়ে কথা বলেন এমনটি নয়।
    তাদের জন্য দ্বিতীয় আখ্যা তৈরি করে রাখা থাকে।

এখন, আমার মানুষের বাইরে নই;
তবে, স্বভাবের দিক থেকে অবশ্যই পৃথক। কাজেই এক এক জন মানুষ স্বভাবগত দিক থেকেও ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক।

তাহলে, যারা এই আখ্যা প্রদান করে থাকেন, তারা কি? তারা কি মানুষ জাতির উর্ধ্বে?

একেবারেই নয়!
এদের সাথে কিছু মানুষের পার্থক্য একটাই আর সেটা হলো, কেউ কেউ নিজের আবেগকে সংযত করতে সক্ষম আর কিছু মানুষ নিজেদের আবেগের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম নন।

আজকের শীর্ষকটি খানিক আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমি স্বভাবগত দিক থেকে বহির্মুখী, কাজেই নিজের অনুভূতিকে ধামাচাপা দিতে পারি না একেবারেই।

ফলস্বরূপ, আমার জীবনে কিঞ্চিৎ বন্ধু আছে, যারা আমার আমৃত্যু পাথেয়।
কারণ, তারা বুঝে গেছে আবেগ লুকিয়ে ভালো মানুষ সাজা আমার ধাতে নেই, ভালো না লাগলেও একগাল হেসে কথা বলা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।

অপরপক্ষে, যারা আবেগ লুকিয়ে জীবনযাপন করে থাকেন, তারাও যে ভুল পথ বেছে নিয়েছেন, এমনটা নয়। তাদের কাছে আবেগের বহিঃপ্রকাশ সেই মানুষদের কাছে করাই শ্রেয় যারা আবেগের মূল্য বোঝেন।

1000028843.jpg
1000028844.jpg
1000028845.jpg
(মনের আবেগদের বৃষ্টি অনুরূপ চোখের হলে ধুয়ে যেতে দিন!কিন্তু অন্যের কাছ থেকে সূর্যালোকের প্রত্যাশা করবেন না মনের মেঘ কাটাতে)

মাঝামাঝি একটা রাস্তাও আছে, যাকে ইংরিজিতে বলে ডিপ্লোমেটিক (বাংলায় কি বলে জানা নেই)!
এই ধরনের মানুষ, সকলের কাছে ভালো থেকে, নিজেদের মতামত পোষণের সময়, দু তরফের হয়েই কথা বলতে পছন্দ করেন! কারণ, তাদের সকলের কাছেই ভালো থাকার প্রয়োজন আছে।

ব্যাক্তি জীবন তথা রাস্তায় পরিচিত এবং অপরিচিত মানুষের সংস্পর্শে এসে যেটা উপলব্ধি করেছি;
তার নিরিখেই

আবেগ বিষয়টি নির্বাচন করে!
আজকের আমার এই লেখা।

যদি অপ্রিয় সত্য কথা বলতেই হয়, তাহলে বলবো এই আবেগের মূল্যায়ন শতকরা নিরানব্বই শতাংশ মানুষ করতে আজও শেখেন নি।

বরঞ্চ, অন্যের আবেগ তথা তার গোপন দুর্বলতা বিক্রি করে খেতেই অভ্যস্ত বেশিরভাগ মানুষ।
নিজের আবেগ তথা কোনো দুর্বলতা কাউকে জানাবার আগে লক্ষ বার ভেবে দেখবেন।

উপর থেকে সভ্যতার মুখোশ পড়া অনেক মানুষের অসভ্য এবং কদর্য চেহারা আমি দেখেছি, যারা দুয়ে দুয়ে চার এর পরিবর্তে পাঁচ করে, আপনার আবেগ বিক্রি করে আত্মসিদ্ধি চরিতার্থ করতে সিদ্ধহস্ত।

প্রথমে ভাবটি এমন যেনো তার বা তাদের মতো আপন এই পৃথিবীতে আপনার দ্বিতীয় মানুষটি নেই, ভাজা মাছ উল্টে খেতে পর্যন্ত জানে না, কিন্তু এটা একটা মায়াজাল।

যেই জালে আপনি আবেগের বশে নিজেকে যেই জড়িয়ে ফেলে গরগর করে মনের কথাগুলো, এবং সাথে ব্যাক্তিগত ভাব বিনিময় করে বসবেন;
পরক্ষণেই দেখবেন সেটা বেঁচে তারা বিকেলের টাইম পাস (সময় অতিবাহিত) করছেন!

আপনি জানতেও পারবেন না, কথার হাত পা গজিয়ে তারা সেটাকে কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে পারদর্শী।
এমন একটি ঘটনার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমি শিক্ষা নিয়েছি,

আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা আছে।

1000028975.gif
(আবেগের প্রকৃত ব্যবহার এদের থেকে শেখা উচিত- সমালোচনা নয় নিজেকে উন্নত করতে ব্যবহার করুন নিজের সমস্ত আবেগকে।)

এই খেওয়ারদের মুল লক্ষ্য নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে দেশ তথা, নিজেদের নাম ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ করে রেখে যাওয়া। খেলা জেতার পরে তাদের চোখের জল সেই বার্তাই বহন করছিল।

আরো এক্ প্রকার মানুষ আছে, যাদের মুখে কেবল অন্যের নিন্দা শুনবেন, তারা নিজেদের ছাড়া কারোর মধ্যেই কোনো ভালো খুঁজে পায় না। অর্থ থাকলেও সম্মান অর্জন করতে এরা অক্ষম।

এদের থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।
কারণ আজকে যে আপনার কাছে অন্যের সমালোচনা করছে, কালকে সেই জায়গায় আপনি থাকবেন না, এমনটা কি বিশ্বাস করা যায়?

আরেক ধরনের মানুষ আছেন, যারা মানুষকে মানুষ নয়, চাকর মনে করেন।
ধরুন আপনি কারোর কোনো একটা কাজ করে দিয়েছেন, সময় দিয়েছেন, শুধুমাত্র ভালবাসা আন্তরিকতার খাতিরে সবটা উজাড় করে দেবার প্রয়াস করেছেন।

আপনাকে কিছু অর্থ অথবা জিনিষ হয়তো দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেটা এটা বলে দেওয়া হয়নি যে, সেগুলো পারিশ্রমিক, বরঞ্চ পরিবারের সদস্য বলেই দেওয়া হয়েছে।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে কথার ধরন, এবং সেই সময় এবং কৃতজ্ঞতাকে চাকরের আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, সেটা ফলাও করে প্রচার করতেও দ্বিধা বোধ করেনি একমুহূর্তে।
তাই, এখন নিজের আবেগের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখাটাই বুদ্ধির পরিচয় বলে আমার মনে হয়।

1000028846.jpg
1000028848.jpg
1000028847.jpg
(ভোরের আলোর আগের তমসা অধিক, কাজেই নিজেকে বৃক্ষের মত অবিচল রাখুন, অন্যের কাঁধের ভরসা না করে!)

জীবন নিজের, সাথে যন্ত্রণা, কাউকে বলে হালকা হতে গিয়ে, খাল কেঁটে কুমির ডাকার কোনো প্রয়োজন নেই।

মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থের হিসেব রাখে, কিন্তু কারোর জন্য, সময়, শারীরিক পরিশ্রম দিয়ে কিছু করলে অনায়াসে সেসব ভুলে বসে থাকে এবং চতুর্দিকে ঢাক পেটায় কত টাকা দিয়েছে সেই কাজের বিনিময়ে।

এখন সেই মানুষগুলো যদি প্রশ্ন করেন, কৃতজ্ঞতার কত দাম ধরেছিলেন তারা, সাহায্য করা মানুষগুলোর জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া সময়ের কত মূল্য নির্ধারণ করেছেন?

পারবে উত্তর দিতে?

কারণ মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত নয়, আর্থিক ঋণ পরিশোধ যোগ্য কিন্তু সময় আর কৃতজ্ঞতার ঋণ কোনো দামেই পরিশোধ সম্ভব নয়।

এখন আমার আবেগ ভাগ করে নেবার একমাত্র স্থান হিসেবে ঈশ্বরকে বেছে নিয়েছি, কারণ, তিনি আমার আবেগের বাইরের এবং ভিতরের উদ্দেশ্য পড়তে সক্ষম।
এর পাশাপশি, তিনি কথাগুলো পাঁচকান করে বেচে খাবেন না মানুষের মতো।

পরিশেষে তাই বলবো, নিজের আবেগ সকলের কাছে তুলে ধরবেন না, মানুষ এখন এগুলো বিক্রি করেও আত্মসিদ্ধি চরিতার্থ করে থাকেন।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

STEEM DREAM TEAM

Your post has been successfully curated by our team via @𝐢𝐫𝐚𝐰𝐚𝐧𝐝𝐞𝐝𝐲 at 35%.

Thank you for your committed efforts, we urge you to do more and keep posting high-quality content for a chance to earn valuable upvotes from our team of curators and why not be selected for an additional upvote later this week in our top selection.



 yesterday 

বরঞ্চ, অন্যের আবেগ তথা তার গোপন দুর্বলতা বিক্রি করে খেতেই অভ্যস্ত বেশিরভাগ মানুষ।
নিজের আবেগ তথা কোনো দুর্বলতা কাউকে জানাবার আগে লক্ষ বার ভেবে দেখবেন।

আপনার এই কথার সাথে আমি ১০০ বার নয় হাজার বার সহমত পোষণ করছি। কেননা বর্তমান সময়ের মানুষ আপনার আবেগ নিয়ে খেলতে অনেক বেশি পছন্দ করে। আপনার সাথে মিশে আপনার গোপন কথা আপনার আবেগ সবকিছু জানার পর। সেই আবেগ অন্যের কাছে বিক্রি করে খেয়ে বেঁচে থাকতে অনেক বেশি পছন্দ করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত কারো কাছে নিজের আবেগ শেয়ার করার আগে, নিজের গোপন কথা শেয়ার করার আগে হাজার বার চিন্তা করতে হবে।

কিছু মানুষ আছে, আমাদের সাথে এমন ভাবে কথা বলে তাদের মায়াজালে আমরা নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলি। এবং তাদের সাথে নিজেদের মনের আবেগ অনুভূতি সবকিছুই শেয়ার করি। কিন্তু পরবর্তীতে তারা আমাদেরকে এমনভাবে সমস্যার মধ্যে ফেলে দেয়। যেখান থেকে উঠে আসতে আমাদের অনেক বেশি সমস্যা হয়।

বর্তমান সময়ে এমন অনেক মানুষ দেখা যায়, যারা কিনা আপনার সাথে ভালো ব্যবহার করে আপনাকে দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নেবে। এবং আপনাকে কিছু জিনিসও দেবে। কিন্তু দিন শেষে আপনাকে চাকরের সাথে মূল্যায়ন করবে। এই মানুষগুলোর কাছ থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

আপনার প্রত্যেকটা কথা বাস্তবতার সাথে একেবারেই মিলে গেছে। আবেগ এমন একটা জিনিস যেটা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই, একটা মানুষ সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে। জানিনা আপনার লেখা অনুযায়ী সঠিক মন্তব্য করতে হয়েছে কিনা। তবে চেষ্টা করেছি ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

 1 minute ago 

যদি অপ্রিয় সত্য কথা বলতেই হয়, তাহলে বলবো এই আবেগের মূল্যায়ন শতকরা নিরানব্বই শতাংশ মানুষ করতে আজও শেখেন নি।

আজ আপনি সমাজ থেকে শুরু করে অনেক বাস্তবিক কথা তুলে ধরেছেন। আজকাল মানুষ মানুষের সাথে গভীরভাবে সম্পর্ক সৃষ্টি করে, তাকে আবেগপ্রবণ করে তার কাছ থেকে অনেক তথ্য শুনে। আর সেটাকে কাজে লাগিয়ে তাকে অনেকভাবেই ব্যবহার করে থাকে।

আর এটা একদম সঠিক বলেছেন প্রায় মানুষ আবেগের মূল্যায়ন করতে পারে না। আর এই জন্য আপনি আবেগ কে ভাগ করার জন্য সৃষ্টিকর্তাকে বেছে নিয়েছেন।