নবান্নর খাওয়াদাওয়া
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। প্রাচীন বাংলার উৎসব গুলো ছিল অনেকটা কৃষি কেন্দ্রিক।কৃষকদের হাতে যখন টাকা পয়সা থাকত উৎসব গুলো তখনই হত সাধারণত।প্রাচীন বাংলার অন্যতম প্রধান উৎসব ছিল নবান্ন। নবান্ন উৎসব সাধারণত অগ্রহায়ন মাসের প্রথমে অনুষ্ঠিত হয়।
নবান্ন সাধারণত কৃষিপ্রধান বাংলার মানুষের প্রাণের উৎসব।এই সময়ে সাধারণত ধান কাটা হয়।কৃষকদের গোলায় আসে নতুন ধান।আর এই ধান দিয়েই তৈরি হয় পিঠা,পায়েস ইত্যাদি। যৌথ পরিবার নিয়ে একসাথে খাওয়াদাওয়া করা, বিষয়গুলো তখন বেশ উৎসব মুখর ছিল।
বর্তমানে এই নবান্ন বিষয়টা অনেকটা ঐতিহ্যের মত হয়ে গেছে।কৃষিকাজ না করলেও প্রায় প্রতিটি বাঙালি হিন্দু পরিবারে নবান্ন উৎসব পালিত হয়। অন্তত আমাদের এদিকে হয়। নবান্নের দিন সকালে সবাই মিলে জমিতে যাওয়া হয় ধান কাটতে।তবে এটা নেহাৎ প্রতিকী অর্থে।আর যাদের জমি নেই তারা বাজারে যায় নতুন চাল কিনতে।
আমাদের এদিকে নবান্ন উপলক্ষে বিশেষ মেলা বসে। মেলা মূলত নতুন ফসলের কিন্তু পরবর্তীতে আরো নানা জিনিস মেলায় সামিল হয়। মেলার একটি ব্লগ বানিয়েছি।এডিটর এর পরীক্ষা শেষ হলেই সেটা পোস্ট করব।আপাতত আমাদের নবান্নর কথা বলি। নবান্নের দিন সকালে চলে গেলাম নবান্নের মেলায়,নতুন চাল আনার জন্য।
এই চাল সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে দিয়ে তারপর সেটাকে সবাই মিলে খাওয়ার মাধ্যমে নবান্নর দিন শুরু হবে। বাড়ির সব থেকে বড় ব্যক্তি আগে এই নতুন চাল গ্রহণ করে।তারপর বাকিরা। নবান্নর খাওয়াদাওয়া মেইনলি হয় রাতে, কিন্তু এবার আমাদের খাওয়াদাওয়া ছিল দুপুরে।আমি যখন চাল আনতে যাই তখন মা বাজার থেকে নতুন শাকসবজী নিয়ে এসে রান্না শুরু করে দিয়েছিল।
তাই দুপুরের মাঝেই রান্না শেষ।সবাই অবশ্য তার আগেই উপস্থিত হয়ে গিয়েছিল। এরপর সবাই মিলে খাওয়াদাওয়ার পালা। এটাই সব থেকে মজার মুহুর্ত। সবাই মিলে খাওয়াদাওয়া টাও একটা আড্ডার মত। খাওয়ার ফাকে ফাকে কত মজার মজার কথা, কত পুরাতন স্মৃতিচারণ হয় তার ইয়ত্তা থাকেনা।এভাবেই মজা করে খাওয়াদাওয়া করার মাধ্যমে আমারের নবান্ন সম্পন্ন হল।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter link
নবান্ন মানেই বাঙ্গালীদের দারুন এক উৎসব। আর এই বিশেষ দিনগুলোতে সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলে গ্রামাঞ্চল থেকে এ সমস্ত নবান্নর উৎসব গুলো অনেকটা কমে গেছে আগের মত আর সে আনন্দ উল্লাস নেই। নতুন ফসল ঘরে ওটাকে কেন্দ্র করে মানুষে অনেক সুন্দর সুন্দর রেসিপি আয়োজন করে থাকতো কিন্তু এখন যেন দিন দিন এগুলো কমে গেছে। যাই হোক আপনার পোষ্টের মধ্য দিয়ে কিন্তু আবারও সেই সুন্দর ছোটবেলার অনুভূতির কিছুটা খুঁজে পেলাম।
নবান্নর অর্থ লক্ষ্মীপূজো। তাই এই পুজো প্রতিটি বাঙালির ঘরে এক অন্য অর্থ রাখে। শহরের দিকে খুব একটা পালিত না হলেও গ্রামেগঞ্জে আজও নবান্ন উৎসব এবং এই পার্বণের প্রচলন আছে। আপনি দারুণ সুন্দর করে নবান্ন উৎসবের ঘরোয়া আয়োজনের ব্যাখ্যা দিলেন। ঘরে ঘরে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক।